পেঁয়াজের রসের অপকারীতা গুলো জেনে নিন।
যাদের অতিরিক্ত এলার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের পেঁয়াজের রস ব্যবহার করা একদম অনুচিত হবে। কেননা পেঁয়াজের রস এলার্জির সমস্যা বাড়িয়ে তোলে এজন্য যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের পেঁয়াজের রস ব্যবহার না করাই উত্তম।
এছাড়াও পেঁয়াজের রস ব্যবহারের ফলে যাদের ত্বকে এলার্জি সমস্যা রয়েছে তাদের ত্বকে এবং চোখে লালচে ভাব, ত্বকের চুলকানি ,শ্বাসকষ্ট, শরীর বিভিন্ন জায়গায় জ্বালাপোড়া ইত্যাদি এলার্জি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
পেজ সূচিপত্র:
- এলার্জি সমস্যা
- অন্ত্রের গ্যাস, লিভার ও অম্বল জনিত সমস্যা
- হৃদপিন্ডের সমস্যা
- অত্যাধিক পটাশিয়াম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
- চোখের নানা রকম সমস্যা
- মুখের দুর্গন্ধ
পেঁয়াজের রস ব্যবহারের সমস্যা গুলো দেখে নিন
এলার্জি সমস্যা
যাদের শরীরে এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের একদমই পেঁয়াজ খাওয়াটা মোটেও নিরাপদ নয়। পেঁয়াজ হচ্ছে অ্যালার্জির একটি অন্যতম উৎস গুলোর মধ্যে একটি। পেঁয়াজের কারণে যদি এলার্জি হয় তবে পেঁয়াজ খেলে ত্বক এবং চোখের লালচে ভাব, ত্বকে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি শ্বাস নিতেও পর্যন্ত অসুবিধা হতে পারে।
বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য নিয়মিত পেঁয়াজ খাওয়া আমাদের দরকার তবে পেঁয়াজ এলার্জিযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য খাওয়াটা মোটে নিরাপদ নয়। কারন এলার্জি ও ক্লিনিকাল ইমিউনোলজি জার্নাল অনুসারে এলার্জির অন্যতম একটি উৎস হচ্ছে পেঁয়াজ।
যদি আপনার পেঁয়াজের কারণে এলার্জি হয়, তবে আপনার মনে রাখা উচিত যে পেঁয়াজ খেলে এই এলার্জির পরিমাণ আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে এবং শরীরে বিভিন্ন এলার্জির মত লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করবে। পেঁয়াজের রস ব্যবহারকালীন যদি এ ধরনের কোন সমস্যা দেখা যায় তাহলে অবশ্যই সেই মুহূর্ত থেকে পেঁয়াজ বা পেঁয়াজের রস ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
অন্ত্রের গ্যাস, লিভার ও অম্বল জনিত সমস্যা
বেশি পেঁয়াজ খাওয়া বা কোন কারনে পেঁয়াজের রস নিয়মিত ব্যবহার করার কারণে আরো একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলো আমাদের দেহের অন্ত্রের গ্যাস সৃষ্টি হয় পেঁয়াজের এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মূলত ফ্রুকটোজ মত প্রাকৃতিক শর্করার উপস্থিতির কারণে কেননা আমাদের পেট বেশিরভাগ শর্করা হজম করতে খুব দক্ষ নয় যার মধ্যে অন্যতম।
চিনি যেহেতু আমাদের পেটে সঠিকভাবে হজম হয় না তাই তারা অন্ত্রগুলিতে প্রবেশ করে যেখানে তারা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ভেঙে যায় ফলেএই গ্যাস তৈরি হয়। তবে কম পরিমাণে পেঁয়াজ কোন হুমকি নয়। যদি আপনি বেশি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করেন তবে অন্তরের গ্যাসের মাত্রা বাড়তে পারি বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে। যেমন অস্বস্তি ভাব পেট ফাঁপা পেট ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
আপনার পাচনতন্ত্রটি পেঁয়াজের প্রতি খারাপ প্রভাব ফেললে লক্ষণ গুলি আরো খারাপ হতে পারে খাদ্য জীবন হুমকি স্বরূপ কখনো বা এটি ভাব এবং ডায়রিয়ার কারণ হতে পারে পেট ভাবছে বুক জ্বালার সমস্যা কিছুতেই আপনার কিছু ছাড়ছে না কিন্তু কেন অতিরিক্ত পেঁয়াজ খাওয়ার পরিমাণে।
অম্বল এমন একটি সমস্যা যার কারণে বুকে জ্বলন্ত সংবেদন এবং চরম ব্যথা অনুভব হয় এটি প্রধান ঘটে আমাদের পেটে উপস্থিত এসিড খাদ্যনালীতে উর্ধ্বমুখী প্রবাহিত হয় এ কারণে মাঝারি ভাবে পেঁয়াজ খাওয়ার পরামর্শ দেন এবং বিশেষত গর্ভবতী মহিলাদের পেঁয়াজ না খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
কারণ গর্ভবতী থাকা কালীন যদি কোন মহিলা পেঁয়াজের মাত্রা বেশি গ্রহণ করে ফেলেন তবে তার শরীরে নানা রকম প্রভাব সৃষ্টি হতে পারে। গর্ভবতী থাকাকালীন অনেক নিয়ম কানুন মেনে খাওয়া দাওয়া করতে হয় যাতে শরীরের কোন রকম অসুবিধা না হয় কারণ এই সময় যদি কোন অসুবিধা হয় তাহলে কোন মেডিসিন গ্রহণ করা সতর্ক থাকতে হয়।
হৃদপিন্ডের সমস্যা
নিয়মিত খাদ্য তালিকায় অবশ্যই আমাদের প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে পেঁয়াজ রাখা আবশ্যক পরিমিত পরিমাণে পেঁয়াজ আমাদের শরীরের জন্য কোন ক্ষতি করে না বরং এটি আমাদের হৃদপিন্ডের পক্ষে খুবই উপকারী যেগুলো আমাদের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
পেঁয়াজের এই উপকার মূলত ভিটামিন খনিজ ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস ইত্যাদির মত পুষ্টিকর উপস্থিতির কারণে হয়। যা পেঁয়াজের উপস্থিত থাকে পটাশিয়াম ভাসোডিলেটর হিসেবে কাজ করে যায় এটি আমাদের রক্তনালী গুলি শিথিল করে এবং আমাদের দেহে রক্ত চলাচলকে উন্নত করে এবং এভাবে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি হ্রাস করে।
তবে এটি লক্ষ্য করা উচিত যে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের হৃদপিণ্ড পক্ষে খুব একটা ভালো নয় কারণ আমাদের দেহে পটাশিয়ামের উচ্চ মাত্রা হাইপোটেশনের জন্ম দিতে পারে। এতে হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা এবং জটিলতা দেখা দিতে পারে। ফলে আপনার অনিয়মিত হার্টবিট এমনকি হার্ড স্ট্রোক এর মত মারাত্মক অঘটন ঘটতে পারে ।
তবে যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে বা ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য নিয়মিত মাঝারি পরিমাণে পেঁয়াজ খাওয়া খুব উপকারী পেঁয়াজের এই সুবিধাটি মূলত পেঁয়াজের কম গ্লাইসেমিক সূচক হওয়ার কারণেই হয়ে থাকে । পেঁয়াজ খাওয়া রক্তের প্রবাহে ধীরে ধীরে সুগার ছেড়ে দেয় এবং এভাবে ডায়াবেটিস পরিচালনা করতে সহায়তা করে।
এগুলো ছাড়াও পেঁয়াজের উপস্থিত প্রোমিয়াম যৌগটি ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কারণ এটি রক্তের প্রবাহে চিনির শোষণ কে ধির করে দেয় খুব বেশি পেঁয়াজ খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বিপদজনকভাবে নিম্ন স্তরে নামিয়ে আনতে পারে ফলে অস্পষ্ট দৃষ্টি দ্রুত হার্টবিট অনিয়মিত হার্টবিট মাথা ব্যথা মাথা ঘোরা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
অত্যাধিক পটাশিয়াম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
পটাশিয়াম এর কাজ হল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা তাই শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ কমে গেলে রক্তচাপ বেড়ে যায় সেই দিক থেকে ভালো সংবাদ যে পেঁয়াজের প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে তবে আপনি যদি খুব বেশি পেঁয়াজ খান তাহলে আপনার শরীরে উলটো বিক্রিয়া হয়ে খুব অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।
কারণ অনেক বেশি পেঁয়াজ খাওয়া আমাদের রক্তচাপকে বিপদজনক ভাবে কমিয়ে আনতে পারি এবং হাইপোটেশন এর জন্ম দিতে পারে হলে ক্লান্তি হালকা মাথা ব্যথা মাথা ঘোরা বমি বমি ভাব হতাশা ঝাপসা দৃষ্টি ইত্যাদি সমস্যায় করতে পারেন।
এছাড়াও আপনি যদি উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপার্টেশন নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতিমধ্যে মেডিসিন গ্রহণ করে থাকেন তবে আপনার ওষুধ গুলির জন্য পেঁয়াজ পরিণত হবে খাওয়া উচিত কারণ শুধু ঔষধ এবং পেঁয়াজ সম্মিলিত প্রভাব আপনার রক্তচাপকে বিপদজনকভাবে নিম্ন স্তরে রাস করতে পারে।
তাই আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যাতে করে আমাদের শরীরে খুব বেশি পটাশিয়াম গ্রহণ না হয় তাই খুবই পরিণত পরিমাণে পেঁয়াজ বা পেঁয়াজের রস আপনি যেটাই ব্যবহার করেন সেই দিকেই খুবই ভালোভাবে ভালো রাখতে হবে।
চোখের নানা রকম সমস্যা
পেঁয়াজ কাটার সময় লক্ষ্য করে থাকবেন যে ,ঝলসানো রস বাতাসে ভেসে চোখে লাগে তাও চোখে জল ঝরায় ও ইরিটেশন সৃষ্টি করে তা সকলের জানা। পেঁয়াজে মিশ্রিত রশির সাথে থাকে সালফিউরিক অ্যাসিড সেটা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা পেঁয়াজ কাটার সময় চোখ জ্বালাপোড়া করে ও পানি ঝরায়।
বিজ্ঞানীরা বলেন এই সালফিউরিক অ্যাসিড চোখের সংস্পর্শে গেলে শুধু চোখ জ্বালাপোড়া সহ চুলকানি নয় তা মানুষকে অন্ধ করে দিতে পারে। বিকালে আমাদের উপমহাদেশের বেশিরভাগ মানুষ পেয়ে আজ চেতনা এখন পেয়ার ছাড়া রান্না করার কথা ভাবাই যায় না মসলা হিসেবে পেঁয়াজের রয়েছে জনপ্রিয়তা।
পেঁয়াজ কাটার সময় চোখ জ্বালাপোড়া করার অসুবিধা থেকে মুক্ত থাকা কষ্টকর তবে কয়েকটি ব্যবস্থা মাধ্যমে এ অসুবিধা থেকে কিছুটা হলেও আরাম পাওয়া যায় যেমন পেঁয়াজ কাটার আগে পেঁয়াজ অনেকক্ষণ ফ্রিজে রাখলে চোখ জ্বালাপোড়া হয় না কারণ কম তাপমাত্রার কারণে।
তো আমরা আমাদের চোখের ক্ষতি কমাতে সরাসরি পেঁয়াজ ব্যবহার করা থেকে সতর্ক থাকব এবং কিভাবে পেঁয়াজ থেকে আমাদের চোখের ক্ষতি কমানো যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখবো।
মুখের দুর্গন্ধ
অনেক মানুষ আছে যারা মুখের প্রবল দুর্গন্ধের সমস্যায় ভোগেন সকালে ঘুম থেকে উঠে তো অবশ্যই টা ছাড়াও সারাদিন মুখে দুর্গন্ধ লেগে থাকে ফলে অন্য কারো সঙ্গে কথা বলতে গেলে মুখের দুর্গন্ধ অস্বস্তির কারণে মানুষের সাথে কথা বলতে লজ্জা বোধ করেন।
মুখে বা শ্বাসে দুর্গন্ধ আপনার স্বার্থের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা দূরের ব্যাপার হলেও আপনাকে খুব বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে এটা নিশ্চিত। আর এই দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে অতিরিক্ত পেঁয়াজ খাওয়া। কাঁচা পেঁয়াজের এ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আপনার মুখ ও শ্বাসকে দীর্ঘ সময় ধরে গন্ধযুক্ত রাখতে পারে।
তো অবশ্যই কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার ফলে আপনার মুখে দুর্গন্ধ হবে এটা নিশ্চিত এজন্য অতিরিক্ত কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
পেঁয়াজের রস সকল ক্ষেত্রে উপকারী তবে এটি সমস্যা তৈরি করে সেটি হল চোখের সমস্যা পেঁয়াজের রসে রয়েছে সালফিউরিক অ্যাসিড সেজন্য পেঁয়াজের রসে অনেক ধার থাকে যা চোখের জন্য খুবই ক্ষতিকর পেঁয়াজের রসের ঝাঁঝ চোখে পড়লে চোখ দিয়ে পানি পড়ে এবং জ্বালাপোড়া করে এমনকি দৃষ্টি শক্তি নষ্ট করে দিতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url